কুরবানী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। কুরবানী ইসলামের অন্যতম শিআর তথা মৌলিক নিদর্শন। কুরআনে কারীমে আল্লাহ্ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, কুরবানীর উট (ও অন্যান্য পশু ) কে তোমাদের জন্য আল্লাহর ‘শাআইর’-এর অন্তর্ভুক্ত করেছি। তোমাদের পক্ষে তাতে আছে কল্যাণ। সুতরাং যখন তা সারিবদ্ধ অবস্থায় দাঁড়ানো থাকে, তোমরা তার উপর আল্লাহর নাম নেবে। তারপর যখন (যবেহ হয়ে যাওয়ার পর) তা কাত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়, তখন তার গোশত থেকে নিজেরাও খাও এবং ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্তকেও খাওয়াও এবং তাকেও, যে নিজ অভাব প্রকাশ করে। এভাবেই আমি এসব পশুকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। —আল হাজ্জ্ব – ৩৬
অন্যত্র আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কোরবাণী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। ‘তাঁর কোন শরীক নেই এবং আমি এরই জন্যে আদিষ্ট হয়েছি আর আমিই প্রথম মুসলিম। আল আনআম – ১৬২ – ১৬৩
কুরবানী এমন একটি ইবাদত যে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরতের পর যখন থেকে কুরবানী করা শুরু করেন, তারপর থেকে আর কখনো বাদ দেননি। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় দশ বছর থেকেছেন এবং বরাবর (প্রতি বছর) কুরবানী করছেন।জামে’ আত-তিরমিজি,১৫০৭
যে ব্যক্তি কুরবানীর নিয়ত করবে তার জন্য একটি বিশেষ আমল হলো- সে যিলহজ মাস শুরু হওয়ার আগেই চুল,নখ এবং সব অবাঞ্ছিত পশম কেটে ফেলবে। এরপর ১ যিলহজ থেকে ১০ যিলহজ পশু কুরবানী করার আগ পযর্ন্ত চুল, নখ এবং শরীরের কোন পশম কাটবে না। এটি একটি মুস্তাহাব আমল। কোন ব্যক্তি যদি যিলহজ মাস শুরু হওয়ার আগে চুল, নখ কাটতে না পারে তাহলে সে কেটে ফেলবে। নতুবা অনেক লম্বা হয়ে যাবে, যা সুন্নাহ পরিপন্থী।
উম্মু সালামা রাদিআল্লাহু আনহা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কুরবানী করতে ইচ্ছুক ব্যক্তি যেন যিলহজের প্রথম থেকে নখ ও চুল না কাটে। সহীহ মুসলিম: ১৯৭৭
যে ব্যক্তি কুরবানী করার সামর্থ্য রাখে না সেও এই আমল করবে। এই আমলের ফজিলতের বিষয়ে একটি হাদীস আছে,আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃনবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি কুরবানীর দিনকে ঈদ উদযাপন করতে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েছি। আল্লাহ এ দিনকে এ উম্মাতের জন্য ঈদ হিসাবে নির্দিষ্ট করেছেন। এক ব্যক্তি বললো, আপনার অভিমত ব্যক্ত করুন, আমি (আমার প্রতিপালিত) দুগ্ধবতী বা মালবাহী পশু ছাড়া অন্য পশু না পেলে কি তা দিয়েই কুরবানী করবো? তিনি বললেনঃ না, বরং তুমি তোমার চুল ও নখ কাটবে, গোঁফ ছোট করবে এবং নাভীর নীচের লোম কাটবে। এ কাজগুলোই আল্লাহর নিকট তোমার পূর্ণাঙ্গ কুরবানী।সুনানে আবু দাউদ: ২৭৮৯